العقيدة الإسلامية (আল আকিদাতুল ইসলামিয়্যাহ) পর্ব ৮ : لا إله إلا الله (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর শর্ত সমূহ (উপ-পর্ব ২ঃ নিশ্চয়তা)
মূলঃ শাইখ মুহাম্মাদ বিন জামীল যাইনু
ব্যাখ্যা সংকলনঃ আবু হাযম মুহাম্মাদ সাকিব চৌধুরী বিন শামস আদ দীন আশ শাতকানী
স্বত্বাধিকারীর অনুমতিদাতাঃ যুলফিকার ইবরাহীম মেমোন আল আথারী।
ব্যাখ্যা সংকলনঃ
২।اليقين المنافي للشك (ইয়াকিন, অর্থ নিশ্চয়তা যা সন্দেহকে প্রত্যাখ্যান করে)
শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি বলেন,
ইস্তিলাহি অর্থেঃ
সেই নিশ্চিত সত্য বিশ্বাস যাতে কোন সন্দেহ নেই, যা বাস্তবতা মোতাবেক এবং ইবাদাতের মাধ্যমে সত্যায়নকারী।
ইয়াকিনের শারীয়াগত সংজ্ঞা এবং এর উদ্দেশ্যঃ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তে ইয়াকিনের শর্তের উদ্দেশ্য হচ্ছে এর উচ্চারণকারী এর সঠিক অর্থই বিশ্বাস করবে নিশ্চিত বিশ্বাস সহকারে এবং এতেই সে বিশ্বাস করবে, এবং তার অন্তরকে এর সাথে আবদ্ধ করে এবং এতে নিশ্চয়তা বোধ করে। এবং তার অন্তরের সন্দেহ দূরীভূত করে এর দ্বারা, এর দিকে যা নির্দেশনা করা তার দ্বারা, এর বাস্তবতা দ্বারা এবং এর মাধ্যমে যা নিরূপিত হয় তার দ্বারা।
এভাবেই সন্দেহের দূরীভূত করা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রিসালাতের ব্যপারে, এবং যা কিছু নিয়ে তিনি এসেছিলেন সে বিষয়েও।
ঠিক যেভাবে নিশ্চিত ইয়াকিনের মধ্যে রয়েছে অপর সকল দীনকে বাতিল সাব্যস্ত করা, এদের অনুসরণ করাকে কুফর সাব্যস্ত করা, এবং মুশরিকদের কুফরে নিজেকে স্থাপন করা হতে বিরত থাকা এবং তাদের ধর্মসমূহকে বাতিল সাব্যস্ত করা। এবং কোন প্রকার তর্ক বিতর্ক নেই যদি দীনের কোন বিষয়ে ওয়াহীর উপস্থাপন করা হয়। এবং দীন ইসলাম এবং ইহুদি, খৃস্টান বা অন্যান্যদের ধ্বংসপ্রাপ্ত কুফরের মধ্যে কোন প্রকার নিকটবর্তীকরন বা একীভূত করন না করা।
এ সকলই তা যা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর ইয়াকিন বিষয়ক শর্তের অন্তর্ভূক্ত। এবং যে কেউ এ ব্যতীত অন্য কিছু দাবী করবে অথবা প্রত্যাশা করবে, নিশ্চিতভাবে সে ইয়াকিনের শর্ত ভঙ্গ করেছে। এবং সে ইসলাম ধর্মত্যাগ করেছে এ গুণের কারণে।
সুতরাং সে ইয়াকিনকে সত্যায়ন করেনি, সন্দেহকে দূরীভূত করেনি বিশবাসসের মধ্যে বিহ্বলতা এবং দ্বিধাকে দূরীভূত করবার মাধ্যমে। সুতরাং তা ইমান নয় এবং প্রকৃত তাওহীদ হয়। এবং তা এই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ উচ্চারণকারী হতে কবুল করা হবে না।
(شرح شروط لا إله إلا الله, শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি, পৃষ্ঠা ১৪৭-১৪৮, মাক্তাবাতু দারিল হিজায)
অর্থাৎ এটি এমন যেন এর বক্তা এই বাক্যের (لا إله الا الله) অর্থ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞানসহ সুনিশ্চিত । কেননা এ ব্যপারে বিশ্বাস কখনই বাড়বে না সুনিশ্চিত জ্ঞান ব্যতীত (আর তা) অনুমান নির্ভর নয়। সেক্ষেত্রে (কিভাবে তাঁর পক্ষে বিশ্বাস বৃদ্ধি সম্ভব) তার মাঝে যদি সন্দেহ আর অবিশ্বাস প্রবেশ করে। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُوْلَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ
তারাই প্রকৃত মু’মিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল(সাঃ) এর প্রতি ঈমান আনার পরে আর কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ।(৪৯ঃ১৫)
সুতরাং এখানে শর্ত দেওয়া হয়েছে আল্লাহর আর রাসুলুল্লাহ (صلى الله عليه وسلم) এর উপর তাদের বিশ্বাসের সত্যায়নের এবং তাদের অবস্থান এরূপ যে তারা অবিশ্বাস করেনি। এর অর্থ তারা সন্দেহ করেনি। আর যে অবিশ্বাসী সে তো মুনাফিকেদের অন্তর্ভূক্ত। এরাই হচ্ছে তারা আল্লাহ যাদের ব্যপারে বলেছেন,
إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ
অবশ্য ঐসব লোক তোমার কাছে অব্যাহতি চেয়ে থাকে, যারা আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে না আর তাদের অন্তরসমুহ সন্দেহে নিপতিত রয়েছে, অতএব তারা তাদের সংশয়ের আবর্তে ঘুর্ণিপাক খাচ্ছে। (৯ঃ৪৫)
সুতরাং তার কোন ঈমান নেই যে لا إله الا الله উচ্চারণ করেছে অবিশ্বাস আর সন্দেহের সাথে। যদিও সে তা ব্যক্ত করে থাকে অনেক লোকের মাঝে। যদিও সে এ কথা নিয়ে ক্রন্দন করে থাকে; এমনকিতা শোনানো হয় সকল লোকের সামনে।
আহমেদ এবং মুসলিমে আবু হুরাইরাহ ( رضي الله عنه ) এর বরাতে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (صلى الله عليه وسلم) বলেছেন,
اشهد ان لا اله الا الله , و اني رسول الله لا يلقى الله بهما عبد غير شاك فيهما الا دخل الجنة
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত এবং আমি আল্লাহর রাসুল। কোন বান্দা আল্লাহর সাথে দেখা করবেনা, এ দুটো বিষয়ে সন্দেহহীন ভাবে, এ (পুরস্কার) ব্যতীত যে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম ২৭, আহমেদ ১০৬৯৬ )
সুতরাং রাসুলুল্লাহ (صلى الله عليه وسلم) শর্ত দিয়েছেন যে ব্যক্তি একথা বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, (তবে) তাঁর অন্তর হতে হবে নিশ্চিত, এতে কোন প্রকার সন্দেহ ব্যতীত। যদি শর্তের খেলাপ করা হয়, তবে শর্তাধীনকেও অস্বীকার করা হবে। সুতরাং জান্নাতে কেউ প্রবেশ করবে না সে ব্যতীত যার অন্তর لا إله الا الله দ্বারা সুনিশ্চিত।
ইয়াকিনের রুকনসমূহ, এর স্থান, এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ঃ
শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি বলেন,
ইয়াকিনের দু’টি রুকনঃ
১। قول القلب (অন্তরের বক্তব্য)
২। عمل القلب (অন্তরের কাজ)
এর স্থান অন্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত, অন্তরের কাজ এবং কথার মাঝে। এবং তা বাহ্যিক নয়। বরং তা গোপন অন্তরের মাঝে, জিহ্বা বা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাঝে নয়, এ ব্যতীত যা কিছু বাধ্যতামূলক। ইমাম আন নাওয়াওয়ী বলেন, “ইয়াকিন খুঁজবার স্থান অন্তর ব্যতীত অন্য কোন স্থান নয়।”
সুতরাং ইয়াকিন শুধুমাত্র অন্তরের জ্ঞান অথবা এর সত্যায়ন নয়, বরং তা অন্তরের শান্তি, নিশ্চয়তা এবং কাজ।
ইবনু তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,”ইয়াকিন এর উদ্দেশ্য অন্তরের ভেতর সম্মত জ্ঞান আর এর উদ্দেশ্য এ জ্ঞানের দ্বারা কাজ। সুতরাং মুকিন (ইয়াকিনকারী) কে সাধারণ করা যায় না যে এ ব্যতীত, যে সম্মত হয়েছে তার অন্তরে জ্ঞান এবং ইয়াকিনের ব্যপারে।”
তিনি আরো বলেন,”ইয়াকিন রয়েছে কাজ, নিশ্চয়তার মাধ্যমে যেভাবে রয়েছে জ্ঞানের মাধ্যমে।”
(شرح شروط لا إله إلا الله, শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি, পৃষ্ঠা ১৫৬-১৫৭, মাক্তাবাতু দারিল হিজায)
ইয়াকিন যার উপর স্থাপিতঃ
শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি বলেন,
১। আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যপারে ইয়াকিনঃ সুতরাং আল্লাহর অস্তিত্বে কোন সন্দেহ পোষণ করা নেই। আল্লাহ্ বলেন, আল্লাহতেই কি সন্দেহ?
أَفِي اللَّهِ شَكٌّ
আল্লাহতেই কি সন্দেহ? (১৪ঃ১০)
২। আল্লাহকে তার রুবুবিয়্যাতে এক করাতে ইয়াকিনঃ সুতরাং বান্দা এই বিশ্বাস করবে যে আল্লাহই হচ্ছেন পরিচালক, স্রষ্টা, রিযিকদাতা, মালিক, কল্যাণকারী, অকল্যাণকারী – একমাত্র, যার কোন অংশীদার নেই। আর এই যে সৃষ্টি জগতে যা কিছু আছে তার সকলেই তার রবত্বের পরাক্রান্ত আর তাঁর ক্ষমতা আর পরিচালনার তলে। তিনি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিচালনা করে থাকেন।
৩। বান্দা কেবলমাত্র আল্লাহর উলুহিয়্যাতে ইয়াকিন রাখবে এবং আল্লাহকে ইবাদাতে এক রাখবে এবং এ বিশ্বাস করবে যে একমাত্র আল্লাহই এ ইবাদাত প্রাপ্তির যোগ্য। সুতরাং তাওহীদ আল উলুহিয়্যাতে ইয়াকিন রাখবে এবং এই বিশ্বাস রাখবে যে সকল আল্লাহ্ তা’আলা ব্যতীত সকল মাবুদ বাতিল।
৪। আল্লাহকে তাঁর পরিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণতার ব্যপারে ইয়াকিন রাখা এবং এই ইয়াকিন রাখা যে তিনি কোন প্রকার কলঙ্ক এবং অপূর্ণতার উর্ধবে।
৫। আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ভাগ্যের ঘটন এবং পূর্ব-নির্ধারনের উপর বিশ্বাস করা এবং এর উপর ইয়াকিন করা বশতঃ ঈমান আনা। এবং একথা জানা যে ইমান, ইসলাম এবং ইবাদাত কোন কল্যাণ বয়ে আনে না যদি ভাগ্যের পূর্বনির্ধারনের উপর বিশ্বাস না করা হয়। এবং এ ইয়াকিন রাখা যে অশান্ত শান্তি পায় না এবং শান্ত অশান্ত হয় না একমাত্র আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত ভাগ্য ঘটন, ভাগ্য নির্ধারন, তাঁর জ্ঞান, তাঁর সৃষ্টি করবার ক্ষমতা, ইচ্ছা ব্যতীত।
৬। ইয়াকিন রাখা ইয়াকিনের অধিকারের মাধ্যমে প্রত্যেক তাগুত – মা’বুদ, অনুসরনকৃত এবং আদেশকারীর ব্যপারে অবিশ্বাস করা। আর এই কুফর এবং শত্রুতার অর্থঃ এমন ধর্ম যা ইসলাম ধর্ম ব্যতীত, এবং ইয়াকিন রাখা মুশরিক, ইহুদি, খৃস্টান এবং অন্যান্য কাফিরদের উপর অবিশ্বাস করবার ব্যপারে, এবং ইয়াকিন রাখা তাদের ব্যপারে শত্রুতা পোষণ করবার বাধ্যবাধকতার উপরে এবং তাদের হতে নিজেকে মুক্ত করবার ব্যপারে। সুতরাং যে কেউ এ সকলে ইয়াকিন আনবে না সে তাওহীদপন্থী নয়।
৭। ইয়াকিন রাখা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নুবুয়্যাতের ব্যপারে এবং ইয়াকিন রাখা তাঁকে অনুসরণ, মান্য করা এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা রাখবার ব্যপারে।
৮। ইয়াকিন রাখা ফেরেশতাকূলের উপর, নবীদের উপর, কিতাবসমূহের উপর যা নাযিল হয়েছে রাসূলগণের উপর।
৯। ইয়াকিন আল কুরআনের উপর এবং এর দ্বারা আমল করবার উপর।
১০। ইয়াকিন রাখা দীন ইসলামের সত্যতার উপর এবং তা এর পূর্বে যা কিছু আসমানী দীন এসেছে তার রদকারী।
১১। ইয়াকিন রাখা শেষ দিনের উপর, মৃত্যু, পুনরুত্থান, বিচার-আচার, জান্নাত এবং আগুণের উপর।
১২। ইয়াকিন সে সকল বিষয়ের উপর যা কিছুর ব্যপারে আল্লাহ্ আমাদের খবর দিয়েছেন এবং যা কিছু দিয়ে তিনি আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং ইয়াকিন করতে হবে তাঁর সততায়, তাঁর দয়া-দাক্ষিন্যে এবং এই যে তিনিই সত্য এবং এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
(شرح شروط لا إله إلا الله, শাইখ খালিদ বিন আলী আল মিরদি আল গামিদি, পৃষ্ঠা ১৭২-১৭৩, মাক্তাবাতু দারিল হিজায)
ইয়াকিনের পর্যায় সমূহঃ
ইয়াকিনের পর্যায় তিনটিঃ
১। علم اليقين(ইলমুল ইয়াকিন)। আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
كَلاَّ لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِينِ
কখনই নয়, যদি তোমরা নিশ্চিত জ্ঞান দ্বারা অবহিত হতে। (১০২ঃ৫)
২। عين اليقين(আইনুল ইয়াকিন)ঃ আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِينِ
ইয়াকিন এর পর তোমরা তাকে তোমাদের নিজ চোখে দেখবে। (১০২ঃ৭)
৩। حق اليقين(হাক্কুল ইয়াকিন)। আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
وَإِنَّهُ لَحَقُّ الْيَقِينِ
ইলমুল এবং নিশ্চিতভাবে তা হচ্ছে নিশ্চিত বিশ্বাস। (৬৯ঃ৫১)
শাইখ ইবনু তাইমিয়্যাহ বলেন,
ইলমুল ইয়াকিন হচ্ছে এমন জ্ঞান যা শোনা, খবর, কিয়াস, গবেষণা ইত্যাদি হতে প্রসূত। আইনুল ইয়াকিন হচ্ছে যা মানুষ প্রত্যক্ষ করে এবং দৃষ্টি শক্তি দ্বারা দর্শন করে। হাক্কুল ইয়াকিন হচ্ছে যাতে সে অংশগ্রহন করে, যা তার কাছে উম্মোচিত হয়, যার সবাদ সে আস্বাদন করে। এ তিনটি পর্যায়কে এভাবে দাড় করানো যায়, কেউ আপনাকে জানাল যে তার কাছে মধু আছে এবং আপনি তার সত্যবাদিতায় কোন সন্দেহ করলেন না। এর পর আপনি তা পর্যবেক্ষণ করলেন এবং তা আপনার ইয়াকিনকে বাড়িয়ে দিলো। এর পর আপনি তা হতে চেখে দেখলেন এবং এর স্বাদ এবং মিষ্টত্ব আস্বাদন করলেন।
(মাজমু’ ফাতাওয়া, শাইখ ইবনু তাইমিয়্যাহ, খন্ড ১০, পৃষ্ঠা ৬৪৫)
শাইখ ইবনুল কায়্যিম আল জাওযিয়্যাহ বলেন,
জেনে নাও এই হাক্কুল ইয়াকিনের পর্যায় এ পৃথিবীতে অর্জন করা সম্ভব নয় কেবল মাত্র রসূলগণ ব্যতীত, তাদের সকলের উপর সালাত এবং সালাম। নিশ্চিতভাবে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইয়াহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নিজ চক্ষু দিয়ে জান্নাত, আগুন অবলোকন করেছেন, আর মূসা শুনেছেন আল্লাহর কালাম তাঁর নিকট হতে কোন প্রকার মাধ্যম ব্যতীত, এবং তাঁর প্রতি বক্তব্য রেখেছেন, পাহাড়কে ধ্বংস করেছেন আর মূসা তা অবলোকন করেছেন, আর পাহাড়কে ধাক্কা দিয়ে চূর্ণ বিচূর্ণ করেছেন।
তবে হ্যাঁ, আমাদের নিকট হাক্কুল ইয়াকিন এ পর্যায় থেকে আসে আর তা হচ্ছে আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু জানিয়েছেন ইমানের সত্যাসত্য হতে যা অন্তর এবং তার কাজ সমূহের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কেননা অন্তর, যদি তাতে অংশগ্রহণ করে এবং তার স্বাদ গ্রহন করে তবে বাস্তবিকভাবে তা হয়ে যায় হাক্কুল ইয়াকিন।
আর আখিরাতের বিষয়-আশয়, প্রত্যাবর্তন, আল্লাহকে চর্মচক্ষুতে দর্শন, তাঁর কালাম শ্রবণ কোন প্রকার মাধ্যম ব্যতীত – এ সকলই মুমিনের সুযোগ সম্ভাবনা এ পর্যায়েঃ ইমান এবং ইলমুল ইয়াকিনে। আর হাক্কুল ইয়াকিন প্রলম্বিত আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ পর্যন্ত।
(مدارج السالكين, শামসুদ্দীন আবি আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনুল কায়্যিম আল জাওযিয়্যাহ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৩০-২৩১, দার তাইবাহ)
(চলবে)